”ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়” প্রবাদটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই পরিচিত। কিন্তু এই ইচ্ছা বা ইচ্ছাশক্তির কাজআসলে কি? আর কিভাবেই বা আমরা এই ”ইচ্ছা” নামক শক্তি কে জাগ্রত করতে পারি?
সঠিক বুদ্ধিমত্তা দিয়ে যা কিছু ভালো তার দিকে আমাদের নিজেদেরকে ধাবিত করাই ইচ্ছাশক্তির কাজ। আর ইচ্ছাশক্তি কে নিজেদের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে পারলেই এর সঠিক ব্যবহার সম্ভব। কারন ইচ্ছাশক্তি ছাড়া সফলতা অর্জন অসম্ভব।
জীবনে সফলতা অর্জন করতে চাইলে ইচ্ছাশক্তিকে জাগ্রত করতেই হবে। ইচ্ছাশক্তিকে জাগ্রত করা শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত ভাবেই সম্ভব। সফলতা অর্জনের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাশক্তির জাগরণ বলতে যা বোঝায় –
★ আমরা চাইলেই যেকোনো কিছু অর্জন করতে পারি এবং নিজেদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা ।
★ নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে যেকোনো নতুন সিদ্ধান্ত নিতে পারা এবং নতুন অভ্যাস রপ্ত করার জন্য সদাপ্রস্তুত থাকা।
★ সকল সম্পদের সঠিক ব্যবহার করার মানসিকতা গড়ে তোলা।
মুলত আত্মবিশ্বাসী হয়ে ইতিবাচক কর্মশক্তির সর্বোচ্চ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারাই ইচ্ছাশক্তির জাগরণ।কিছু পরিস্থিতি বা মনোভাব আমাদের ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করতে বাঁধা প্রদান করে। সেসকল পরিস্থিতি ও তা মোকাবিলা করার উপায়-
★দ্বিধা বা সংকোচ : পূর্বের কোনো খারাপ অভিজ্ঞতা, গৃহীত সিদ্ধান্তের খারাপ ফলাফল আমাদের নিরুৎসাহিতকরে দেয় যার ফলে আমরা দ্বিধা-দন্দ্বে পড়ে যাই নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে। আবার বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ এর মধ্যে কোন পদক্ষেপ নির্বাচন করা উচিৎ সেটিও আমাদের মধ্যে দ্বিধা তৈরি করে ফলে আমরা ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগে পিছিয়ে পড়ি।
এক্ষেত্রে সর্বপ্রথম প্রবল আত্মবিশ্বাসী হয়ে সবধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলার সাহস সঞ্চার করে ইচ্ছাশক্তি প্রয়োগের মনোভাব আনতে হবে।
★অলসতা : অনেকেই আছে যারা জীবনকে উদ্দেশ্যেহীন মনে করে, যারা ত্যাগ স্বীকার করতে চায়না, যাদের জীবনের কোনো লক্ষ্য নেই, যারা নিজেদের কাছেই বোঝাস্বরুপ। খেয়ে,ঘুমিয়ে আর বিষন্নতা নিয়েই তারা জীবন পার করে দিতে চায়। এই চরম অলসতা তাদের ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করতে দেয়না।
এই ধরনের মানুষের ক্ষেত্রে একটাই উপায় আত্ম-উপলব্ধি।আত্ম-উপলব্ধি থেকে ছোট্ট প্রচেষ্টা দিয়ে শুরু করেআস্তে আস্তে ইচ্ছাশক্তি কে জাগিয়ে তুলতে হবে।
★অতিরিক্ত সক্রিয়তা : কিছু মানুষ আছে নিজেকে অতিব্যাপক মনে করে, তারা পরিকল্পিত ভাবে ইচ্ছাশক্তির ব্যবহার করতে পারেনা, সকল ক্ষেত্রেই নিজেকে অন্তর্ভুক্ত করে।এরা সাধারনত বদমেজাজি, অতিব্যস্ত, ধৈর্যহীন ও অবাস্তববাদী ধরনের। অতিরিক্ত আবেগপ্রবণতা ও অস্থির মস্তিষ্ক থেকে এ ধরনের ব্যক্তিত্ব গঠিত হয়। ইচ্ছাশক্তির সঠিক ব্যবহার তাদের অজানা।
এক্ষেত্রে সঠিক দিকনির্দেশনা ও উপদেশ এর মাধ্যমে এদের মধ্যে ইচ্ছাশক্তির নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক ব্যবহার এর গুরুত্ব উপলব্ধি করাতে হবে যেন ধীরে ধীরে তারা সকল পরিস্থিতি তে সঠিকভাবে ইচ্ছাশক্তির প্রয়োগ করতে পারে।
★অতি বাস্তবিকতা : অতি বাস্তবিক মনোভাব আমাদের ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করতে দেয়না। এই অতি বাস্তববাদী মানুষেরা নিজেদের গন্ডি দৈনন্দিন সাধারণ দায়িত্ব ও কর্মকান্ডের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়। উন্নতি বা সফলতার দিকে এদের উৎসাহ নেই। সাধারণ জীবন যাপনেই অভ্যস্ত।
এই মনোভাবের উদ্দেশ্যে একটাই কথা প্রত্যেক পরিবর্তন মানুষের জীবনে নতুন দিগন্তের পথ দেখায়। আত্মউন্নতির ধারায় এবং নতুনত্বের দিকে নিজেকে পরিচালনা করাই জীবনের সঠিক উদ্দেশ্য পুরন করে।
ইচ্ছাশক্তিই আত্মশক্তি! ইচ্ছাশক্তি কে জাগ্রত করতে পারলে ও সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে পারলে সফলতা নিশ্চিত। এজন্যে সফল হওয়ার পথের প্রথম পদক্ষেপ হোক ইচ্ছাশক্তির জাগরণ।